নিউজ ডেস্কঃ- যতই দিন যাচ্ছে শীতের আগমন ততোই বাড়ছে, কনকনে শীত পিঠার দোকান এর সমাহার দেখা যায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে।ঠিক তেমনি আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় অহরহ দেখা যাচ্ছে এই ছোট ছোট ক্ষুদ্র পিঠার দোকান। এসব পিঠার দোকানের ভিতর অন্যতম তাজরীনের আহত শ্রমিক পিঠাওয়ালী শিল্পী আক্তার পিঠার দোকান। তার সাথে কথা বলে জানা যায় তিনি প্রতি বছর শীতের এই মৌসুমে পিঠার দোকান দিয়ে তার জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। পিঠাওয়ালি শিল্পী আক্তার তিনি বলেন তার সংসারে পরিবারের সদস্য সংখ্যা পাঁচ জন ছোট্ট এই পিঠার দোকান দিয়ে তার পরিবারের মুখে দুই বেলা দুই মুঠো আহার তুলে দিতে সর্বদা জীবন সংগ্রামের সাথে যুদ্ধ করে চলছে তিনি । পিঠার দোকানে দেখা যায় সব বয়সি ছেলেমেয়ে ও বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের সমাগম।
শিল্পী আরো বলেন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ভয়ে পিঠা বিক্রি কমে হচ্ছে তাই অভাব অনটনে দিন পার করছি, ছোটো বাচ্চা বয়স্ক মা নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিন যায় আমাদের। সংসারের হাল ধরার মতো কেউ নেই, নিজের জীবন জীবীকা নিজের করতে হয়। স্বামী মারা গিয়েছে প্রায় ১৩ বছর আগে তখন তার মেয়ের বয়স ছিলো গর্ভাবস্থায় ৬ মাস, আজ তার বয়স (১৩) পৃথিবীতে আগমনে থাকার অপেক্ষায় সেই শিশুটি এখন ৮ম শ্রেনীতে পড়াশোনা করে। তার পড়াশোনার খরচ জোগান দেওয়া এখন শ্লিপির জন্য অনেক কষ্ট সাধ্য। যদি কোন দয়াবান ও বিত্তশালী ব্যক্তি যদি একটু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতো হয়তো মা বোন বাচ্চা নিয়ে জীবন টা চালাতে পারতাম। এসব কথা বলতে যেয়ে হত দারিদ্র্য পিঠাওয়ালী শ্লিপি অঝোরে কাঁদতে থাকেন আরও বলেন আজ যদি আমার স্বামী বেঁচে থাকতো বাড়িতে একট জমি থাকতো তাহলে তো আর প্রকাশ্যে এভাবে পিঠা বিক্রি করতাম না। সংসারে সচ্ছলতা নিয়ে আসতে ২০১১ সালে আশুলিয়া নিশ্চিন্তপুর এলাকায় তাজরীন গার্মেন্টসে চাকরি নেন তিনি, কিন্তু বিধি বাম গত ২০১২ ইং২৪ নভেম্বর শ্লিপির সব সপ্ন ভেঙ্গে যায় সব সপ্ন পুড়ে যায় তাজরীন গার্মেন্টসের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে। সে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের বনর্না দিতে গিয়ে বলেন আগুনের লেলিহান শিখায় যখন আমরা সাধারন শ্রমিকেরা বাঁচার জন্য চেষ্টা করি, ধোয়ায় আচ্ছন্ন কারখানা,তখনই জীবন বাঁচাতে সিরি থেকে নামতে গিয়ে আহত হই। সে আঘাত নিয়ে এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে তিনি, পায়নি কোন সরকারি বা কোন সাহায্যকারি সংস্থার নিকট হতে কোন সহযোগিতা। তিনি বলেন আমরা যদি সরকারি সহযোগিতা টুকুও পেতাম তাহলে একটা ছোট দোকান দিয়ে জীবন চালাতে পারতাম।
এলাকার স্থানীয় মানুষদের সাথে কথা বলে জানা যায় শ্লিপি শিতের মৌসুমে পিঠা বিক্রি করে এবং অন্য সময় রাস্তায় ও মানুষের বাসায় বাসায় গিয়ে কাপড় বিক্রি করে, কষ্ট করে তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কোন রকম জীবন পাড় করছে।