আল আমীন (শেরপুর বিশেষ প্রতিনিধি)
শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার মানিকচাদপাড়া গ্রামে ফসলের মাঠে এক কৃষক ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করে গত মঙ্গলবার আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে দুজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই কৃষকের নাম সফি উদ্দিন। তাঁর বাড়ি শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার মানিকচাঁদ গ্রামে।
আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে ওই কৃষকের বড় ছেলে আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে এই মামলা করেন। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য মজিবর রহমান ও একই গ্রামের কৃষক আহাম্মদ আলী।
নিহতের পরিবার, এলাকাবাসী ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মানিকচাঁদ পাড়া গ্রামের আহাম্মদ আলী নামের এক কৃষক চলতি বোরো আবাদের জন্য বিএডিসি থেকে একটি সেচ পাম্প স্থাপনের অনুমোদন পান। একই গ্রামের নিহত সফি উদ্দিনও বিএডিসি কর্তৃপক্ষের কাছে নতুন সেচ পাম্প স্থাপনে অনুমোদন পাওয়ার জন্য আবেদন করেন এবং পাশের বাদলাকুড়া ফসলের মাঠে বোরিং করেন।
এদিকে একই মাঠে দুটি সেচ পাম্প স্থাপন নিয়ে সফি উদ্দিন ও আহাম্মদ আলীর মাঝে বিরোধ বাঁধে। বিরোধের একপর্যায়ে সুরাহার লক্ষে স্থানীয় ইউপি সদস্য মজিবর রহমান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে এক সালিশি বৈঠক হয়।
এতে সফি উদ্দিনের বোরিং খরচ বাবদ ২০ হাজার টাকা আহাম্মদ আলী দিয়ে দেন ও সফি উদ্দিন সেচ পাম্প আর স্থাপন করবেন না বলে সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া ফসলের মাঠ আহাম্মদ আলীকে ছেড়ে দেবেন মর্মে সিদ্ধান্ত হয়। নিজস্ব জমি না থাকায় আহাম্মদ আলী পাশের জমিতে নিজ অনুমোদিত সেচ পাম্প স্থাপনের উদ্যোগ নিলে সফি উদ্দিন বাধা দেন।
সালিসের সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করায় ইউপি সদস্য মজিবর রহমান ও আহাম্মদ আলী ক্ষিপ্ত হয়ে সফি উদ্দিনকে দেওয়া ২০ হাজার টাকা ফেরত চান এবং চাপ প্রয়োগ করেন। পরে চাপ সইতে না পেরে রাগে ক্ষোভে গত মঙ্গলবার রাতের আধারে ফসলের মাঠে বাঁশ দিয়ে ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করে আত্মহত্যা করেন সফি।
নিহতের স্বজনেরা জানান, মৃত্যুর আগে সফি উদ্দিন বলে গেছেন তাঁর যদি মৃত্যু হয় তবে এ মৃত্যুর জন্য মজিবর মেম্বার ও আহাম্মদ আলী দায়ী থাকবেন।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য মজিবর ও কৃষক আহাম্মদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহাম্মেদ বাদল বলেন, ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে দুজনের নামে মামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।।